সিলেটের জাফলং, বিছনাকান্দি, তামাবিল, লালাখাল ও রাতারগুল ভ্রমণ
সিলেটের জাফলং, বিছনাকান্দি, তামাবিল, লালাখাল ও রাতারগুল থেকে ফিরে
Zahid Rahman জানালেন ভ্রমন অনুভুতির কথা।
যাত্রা শুরুঃ ১৩ সেপ্টেম্বর, ২০১৮, বৃহস্পতিবার রাতের উপবন এক্সপ্রেস এ করে সিলেট এর উদ্দেশে রওনা হলাম। পরদিন শুক্রবার ভোর ৫ টায় ট্রেন থেকে নেমে আমরা হোটেল এ আমাদের লাগেজ রেখে ব্যাগপ্যাক এ করে আজকের দিনের প্রয়োজনীয় সামগ্রী নিয়ে বের হয়ে গিয়েছিলাম। হোটেল এর পাশের রেস্টুরেন্ট থেকে সকালের নাস্তা করে নিলাম। তার আম্বরখানা সিএনজি স্টেশন থেকে ২টি সিএনজি রিজার্ভ করলাম। একটি তে আমরা ৪ জন ও অপরটিতে আমাদের এক বন্ধুর ৪ জন সিনিয়রদের একটা গ্রুপ উঠেছিল। প্রথমেই আমরা চলে যাই হাদারপার ঈদ্গাহ ঘাট, এটাকে ডাকঘর ঘাটও বলা হয়ে থাকে। এখান থেকে ট্রলার ভাড়া করে আমরা চলে আসি বিছনাকান্দি তে। এখানে ঘণ্টা দুয়েক ঘুরার পর, আমরা আবার হাদারপার ঈদ্গাহ ঘাট এ ফিরে সেখান থেকে চলে আসি রাতারগুলের চৌরঙ্গীর ঘাট এ। এখান থেকে আমরা ২ টা গ্রুপ আলাদা ২ টা নৌকা তে চড়ি। চাইলে আমরা একটি নৌকাতেই ঘুরতে পারতাম। কিন্তু এ নৌকাগুলো ইঞ্জিনচালিত না হওয়ার কারণে এবং ছবি তোলার সুবিধার্থে আমরা আলাদা ২টি নৌকা নেই। এখানে ঘন্টা খানেক ঘুরে আমরা রাতারগুলেই কায়াকিং করেছিলাম। আর তারপর আমরা বিকেলে হোটেলে রওনা দিই। রাতের খাবার খেয়েছিলাম পাঁচ ভাই রেস্টুরেন্ট এ।
দিন ২ শুরুঃ
এদিন সকালের শুরুটা হয়েছিল পানসী তে সকালের নাস্তা করার মাধ্যমে। পানসী থেকে বের হয়েই রাস্তা থেকে সিএনজি সারাদিনের জন্য রিজার্ভ করে নিলাম। প্রথমেই আমরা গেলাম জাফলং এ। সেখানে নদী পার হয়ে চলে গেলাম সংগ্রামপুঞ্জি ঝর্ণায়। ঝর্ণাটা আসলেই অনেক সুন্দর। সেখানে সময় কাটিয়ে চলে আসলাম তামাবিল জিরো পয়েন্ট এ। কোন ভি আই পি এখানে আসার কথা ছিল বলে আমরা সেখানে বেশিক্ষণ ছিলাম না। চলে আসলাম লালাখালের সারিঘাট এ। এখানে ৬ জন সিনিয়র ভাইয়াদের একটা গ্রুপের সাথে মিলে একসাথে একটা ট্রলার ভাড়া করে নিলাম। লালাখাল ঘুরে ফিরতে ফিরতে আমাদের সন্ধ্যা হয়ে গিয়েছিল। তারপর সেখান থেকে সরাসরি পাঁচ ভাই রেস্টুরেন্ট এ রাতের খাবার খেয়ে, হোটেলে যেয়ে সব গুছিয়ে রেলস্টেশনে এসে রাতের উপবনে করে ভোরে ঢাকায় পৌঁছে যাই।
আমাদের ৪ জনের মোট এবং জনপ্রতি খরচ, উভয় হিসাব ই নিচে দিয়ে দিলাম।
খরচঃ
দিন ১, শুক্রবারঃ
ঢাকা – সিলেট উপবন এক্সপ্রেস ট্রেন = ২৬৫ টাকা [শোভন]
রেলস্টেশন থেকে হোটেল পর্যন্ত আসার ভাড়া = (১০০/৪) = ২৫ টাকা [মাজার রোড]
হোটেল ভাড়া = (১৭০০/৪) =৪২৫ টাকা [শুক্রবার ভোর ৬ টা থেকে শনিবার রাত ৯ টা পর্যন্ত]
নাস্তা= ২৫ টাকা [হোটেল এর পাশের রেস্টুরেন্ট]
সারাদিনের জন্য সি এন জি রিজার্ভ = (১৪০০/৪) = ৩৫০ টাকা
বিছনাকান্দি আসা-যাওয়া ট্রলার ভাড়া = (১২০০/৮) = ১৫০ টাকা [এখানে আমাদের সাথে আমাদের এক বন্ধুর ৪ জন সিনিয়রদের একটা গ্রুপ যুক্ত হয়েছিল]
রাতারগুল নৌকা ভাড়া = (৭৫০/৪) = ১৯০ টাকা
রাতারগুল কায়াকিং = (১৫০/৩) = ৫০ টাকা
রাতের খাবার = ১৪০ [পাঁচ ভাই রেস্টুরেন্ট]
দিন ২, শনিবারঃ
সকালের নাস্তা = ৬০ টাকা [পানসী রেস্টুরেন্ট]
সারাদিনের জন্য সি এন জি রিজার্ভ = (১৪০০/৪) = ৩৫০ টাকা
জাফলং নদী পারাপার = ১০*২=২০ [আসা – যাওয়া মোট ২০ টাকা]
লালখাল ট্রলার ভাড়া = (১৪০০/১০) = ১৪০ টাকা [এখানে আমাদের সাথে ঢাকার বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় এর ৬ জন সিনিয়রদের একটা গ্রুপ যুক্ত হয়েছিল]
রাতের খাবার = ২০০ টাকা [পাঁচ ভাই রেস্টুরেন্ট]
হোটেল থেকে রেলস্টেশন আসার ভাড়া = ১০০/৪ = ২৫ টাকা
সিলেট – ঢাকা উপবন এক্সপ্রেস ট্রেন = ২৬৫ টাকা [শোভন]
*** জনপ্রতি আমাদের মোট খরচ হয়েছিল = প্রায় ২৯০০ টাকা ***
দিন ১, শুক্রবারঃ
ঢাকা – সিলেট উপবন এক্সপ্রেস ট্রেন = ২৬৫ টাকা [শোভন]
রেলস্টেশন থেকে হোটেল পর্যন্ত আসার ভাড়া = (১০০/৪) = ২৫ টাকা [মাজার রোড]
হোটেল ভাড়া = (১৭০০/৪) =৪২৫ টাকা [শুক্রবার ভোর ৬ টা থেকে শনিবার রাত ৯ টা পর্যন্ত]
নাস্তা= ২৫ টাকা [হোটেল এর পাশের রেস্টুরেন্ট]
সারাদিনের জন্য সি এন জি রিজার্ভ = (১৪০০/৪) = ৩৫০ টাকা
বিছনাকান্দি আসা-যাওয়া ট্রলার ভাড়া = (১২০০/৮) = ১৫০ টাকা [এখানে আমাদের সাথে আমাদের এক বন্ধুর ৪ জন সিনিয়রদের একটা গ্রুপ যুক্ত হয়েছিল]
রাতারগুল নৌকা ভাড়া = (৭৫০/৪) = ১৯০ টাকা
রাতারগুল কায়াকিং = (১৫০/৩) = ৫০ টাকা
রাতের খাবার = ১৪০ [পাঁচ ভাই রেস্টুরেন্ট]
দিন ২, শনিবারঃ
সকালের নাস্তা = ৬০ টাকা [পানসী রেস্টুরেন্ট]
সারাদিনের জন্য সি এন জি রিজার্ভ = (১৪০০/৪) = ৩৫০ টাকা
জাফলং নদী পারাপার = ১০*২=২০ [আসা – যাওয়া মোট ২০ টাকা]
লালখাল ট্রলার ভাড়া = (১৪০০/১০) = ১৪০ টাকা [এখানে আমাদের সাথে ঢাকার বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় এর ৬ জন সিনিয়রদের একটা গ্রুপ যুক্ত হয়েছিল]
রাতের খাবার = ২০০ টাকা [পাঁচ ভাই রেস্টুরেন্ট]
হোটেল থেকে রেলস্টেশন আসার ভাড়া = ১০০/৪ = ২৫ টাকা
সিলেট – ঢাকা উপবন এক্সপ্রেস ট্রেন = ২৬৫ টাকা [শোভন]
*** জনপ্রতি আমাদের মোট খরচ হয়েছিল = প্রায় ২৯০০ টাকা ***
বি.দ্রঃ সংগ্রামপুঞ্জি ঝর্ণায় গিয়ে দেখলাম অনেকেই ঝর্ণায় সাবান শ্যাম্পু দিয়ে গোসল করছে, এসব সাবান শ্যাম্পুর প্যাকেট ঝর্ণার নিচে যেয়ে পাথরে আটকে জমে থাকে। বিছনাকান্দি তে অনেক জায়গায় মদের বোতল পড়ে থাকতে দেখেছি। যে বা যারাই এসব করেন দয়া করে টুরিস্ট স্পটেই এসব ফেলে আসবেন না। কারণ তা কোনভাবে ভেঙ্গে গেলে সেটার কাঁচের টুকরা কারো পায়ে ঢুকে যেতে পারে। আর প্রায় সব স্পট এই কমন জিনিস হল চিপ্সের প্যাকেট, বোতল, যেগুলা বিভিন্ন জায়গায় পড়েছিল। আমাদের দেশের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য সংরক্ষণের দায়িত্ব আপনার, আমার সবার ই। সকলের একটু সচেতনতা-ই পারে আমাদের দেশের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য টিকিয়ে রাখতে ও আরো বৃদ্ধি করতে। ধন্যবাদ।
কোন মন্তব্য নেই